লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে আবেগের ক্ষেত্রে সারা ভারতের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ একদম প্রথম সারিতে। নামে লিটল হলেও স্বাধীনতার পর থেকে নতুন ভাবনা চিন্তার জগতে সব সময়েই নতুন কিছু দিয়ে এসেছে লিটল ম্যাগাজিন। তবে সমস্যাও অনেক। নতুন ভাবনা নিয়ে পত্রিকা শুরু করলেও সমস্যা হয় অর্থের যোগান নিয়ে। পুরোটাই বাজারের উপর নির্ভর করে না থাকার জন্য বাজারে লিটল ম্যাগাজিন বিক্রি করা সব সময়েই কঠিন। কোভিড পরিস্থিতিতে এই সমস্যা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে যাত্রা শুরু করা পত্রিকার ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকাঠামো নির্মাণ করতেও সময় লাগে। সেই সময়টা না পেলে বিজ্ঞাপন পাওয়া যায় না। জেলা মফঃস্বলে পত্রিকা পাঠানোর সমস্যা, পাঠালেও পত্রিকা বিক্রির টাকা ফিরে পাওয়াতেও সমস্যা বিশেষত এই কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষের চলাফেরা যখন অনেকটাই সীমাবদ্ধ। এদিকে দেশের প্রায় সমস্ত কিছুর সাথে সাথে পত্রিকা ছাপার খরচও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। লেখকদের যথাযথ সাম্মানিক দিতে চাইলেও পত্রিকা গোষ্ঠীগুলির নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।
নতুন শুরু হওয়া সহজিয়া পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক নাফিস আনোয়ার জানান, সহজিয়া পত্রিকা গত বছর শারদীয়ার সময় ছাপার অক্ষরে প্রথম যাত্রা শুরু করে। বছরে দুটো করে উৎসব সংখ্যা করার পরিকল্পনা নিয়ে সহজিয়া কাজ করছে। একটি ঈদ অপরটি শারদ সংখ্যা। একে তো পত্রিকা ছাপানোর বিপুল খরচ, তার উপর জেলার বহু স্টল থেকে বই বিক্রির টাকা ফিরে আসেনি। শারদীয়ার সময় কলকাতার বেশ কিছু পুজো স্টলে সহজিয়া বিক্রির জন্য দেওয়া হয়েছিল, বেশ কিছু বিক্রিও হয় কিন্তু একটা স্টল থেকেও এখনও টাকা পাননি তাঁরা।
এর মধ্যে আনোয়ার বাবু একটু আশার আলোও দেখছেন। প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির জন্য মানুষের বেশ কিছু বিষয়ে অভ্যস্ত হয়েছেন। অনলাইন পেমেন্ট, গুগুলের বেশ কিছু সার্ভিস ব্যবহার করতে মানুষজন অনেকটাই অভ্যস্ত হওয়ায় তাঁরা Google Form, WhatsApp ইত্যাদি ব্যবহার করে নিজেরাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পত্রিকা পাঠাতে উদ্যোগ নিয়েছেন। ব্যাঙ্ক একাউন্টে পেমেন্ট করে দিলে আগ্রহী পাঠকদের ইন্ডিয়া পোস্টের মাধ্যমে অতি দ্রুত সহজিয়া পত্রিকা পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন তাঁরা। পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীর আশা এভাবেই তাঁরা এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও আরো বেশি আগ্রহী পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন সহজিয়া পত্রিকাটিকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সহজিয়া পত্রিকার ঈদ সংখ্যা ২০২১ আর কয়েকদিনের মধ্যেই প্রকাশিত হবে।
Google Form ব্যবহার করে পাঠকের সঙ্গে সহজিয়া পত্রিকা গোষ্ঠী কীভাবে যোগাযোগ নিবিড় করার চেষ্টা করছেন সেটি দেওয়া হল। এই ফর্মের মাধ্যমে সহজিয়া ২০২১ ঈদ সংখ্যা এবং পুরানো সংখ্যা সরাসরি বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা।
গুগল ফর্মের সাহায্যে পাঠকের পেমেন্ট ও শিপমেন্ট তথ্য আদানপ্রদান করা হচ্ছে।