প্রায় দেড় বছরের উপরে বন্ধ সব স্কুল, কলেজ। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস চললেও সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন কোনো ব্যবস্থার সুবিধা পাচ্ছে না। ফলে বই, ড্রেস, মিডডে মিলের সুবিধা তারা পেলেও নিয়মিত পড়াশুনার চর্চা থেকে অনেকটাই বিরত।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে প্রায় ১০০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে নব্বইজন ভুলে গিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ। আশি জনের কাছাকাছি ভুলে গিয়েছে সাধারণ যোগ বিয়োগটুকুও। সমীক্ষাটি করা হয়েছে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীর প্রায় ৮ হাজার ছাত্রছাত্রীর উপরে।
আশা করা হচ্ছে পুজোর পরেই খুলে যাবে স্কুল, কিন্তু অভিভাবকেরা অনেকেই এই সিদ্ধান্তে নারাজ। খুদে শিশুদের এখনও টিকার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি এবং করোনার তৃতীয় ঢেউ আক্রান্ত করবে কম বয়সী বাচ্চাদের। এই কারণে মা বাবারা স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না। কিন্তু অন্যদিকে যদি স্কুল খোলা হয় তবে কিভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হবেন শিক্ষক শিক্ষিকারা এটাই নিয়ে চিন্তিত তারা। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে দরকার নিয়মিত চর্চা ও অধ্যবসায়, সেই জন্য বাড়িতেও এই লকডাউনে খুদেদের পড়াশুনো নিয়ে চর্চার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু পরিকাঠামো না থাকায় অনলাইন ক্লাস কোনোভাবেই নিতে পারেনি অসংখ্য সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা। ফলে নিয়মিত পড়াশুনো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক ছাত্রছাত্রী।
চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা যদি সাধারণ যোগ বিয়োগ ভুলে যায় তবে তাদের ভবিষ্যৎ দিনগুলির কথা ভেবে আশঙ্কা প্রকাশ করছে অনেক শিক্ষক। অনেকে আবার মনে করছেন যে এই সাধারণ বেসিক জিনিস পুরোপুরিভাবে ভুলতে পারেনা তারা, একটু সাহায্য করলেই ফের ছন্দে ফিরে আসতে পারবে তারা। ফলে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে শিক্ষক শিক্ষিকারা এগিয়ে আসতে চাইছেন। এই পরিসংখ্যানটি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সংগঠন ‘শিক্ষা আলোচনা’র সমীক্ষাভিত্তিক রিপোর্ট ‘লার্নিং টুগেদার: দ্য অপারচুনিটি টু এচিভ ইউনিভার্সাল এডুকেশন’।
ছবি: iStock