আম্পানের বর্ষপূর্তিতে যে উদ্বেগের মধ্যে রেখেছিল ইয়াস, তাতে কলকাতাবাসী কিছুটা রক্ষা পেলেও সাগরদ্বীপ, দিঘা, হলদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু অংশ ও মূলত উপকূল তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ভয়াবহ অবস্থা। মঙ্গলবার সকাল থেকে জানা যাচ্ছিল বঙ্গোপসাগরে যে নিম্নচাপের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি, সে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস অতি প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে পথ বদল করছে। আশঙ্কা করা যাচ্ছিল যার রোষের মুখে পড়তে হবে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ বা আংশিক উড়িষ্যাকে, তা পথ বদল করে এবং বুধবার সকাল ন’টা চল্লিশ নাগাদ সেটি আছড়ে পড়ে উড়িষ্যার উপকূল এলাকা ধামরা ও বালেশ্বরে। স্থলভাগে ঢোকার পরে সেখানে ইয়াস তান্ডব চালায় প্রায় ঘন্টা তিনেক। পরে আস্তে আস্তে নিজের শক্তি হারিয়ে তা ঝাড়খণ্ডের দিকে এগিয়ে যায়।
যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে সর্বত্র ব্যবস্থা আগে থেকে নেওয়ার কারণে অনেকাংশে প্রাণহানি আটকানো গেছে। তবে বহু এলাকা এখন জলপ্লাবিত। ল্যান্ডফলের সময় ঘন্টায় ১৩০-১৪০ কিমি প্রতি ঘন্টা। বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে গিয়েছে, সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সঙ্গে চলেছে ব্যাপক বৃষ্টি।
ঝড়ের কারণে ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি মাত্রায় ক্ষতি হয়েছে সমুদ্রের নোনা জল স্থলভাগে ঢুকে পড়ায়। চানুয়া, চৌমুখা ও বালেশ্বরের বিভিন্ন জায়গায় জল প্লাবনের ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ে। গাছের ডাল ভেঙে কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু উড়িষ্যা নয়, বঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, সুন্দরবন, সাগরদ্বীপ, পূর্ব মেদিনীপুরেও এইদিন ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস হয়েছে।
উড়িষ্যার যেই সব জায়গায় গাছ পড়ে রাস্তা আটকে গিয়েছিল, তা দ্রুত সরানোর ব্যবস্থা করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তৎপর ছিল পুলিশ ও প্রশাসন। বিমান চলাচলও স্বাভাবিক করা হয় বিকেলের পরে। তবে উপকূলবর্তী এলাকা ও ইয়াসের তান্ডবের কবলে পড়া এলাকাগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস করেছে আবহাওয়া দপ্তর।
ছবি : https://unsplash.com/