টাউটের তান্ডব

গতবছর গ্রীষ্মে আমরা দেখেছি বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ থেকে বেড়ে ওঠা আমফান কিভাবে করোনার প্রথম ঢেউয়ের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যাকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছিল। প্রকৃতির হাত থেকে রক্ষা পেতে মনে হয় এখনও ঢের দেরি। এবছরেও সারা দেশ যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে নাজেহাল, তখন আরব সাগরের নিম্নচাপ থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় টাউটের দাপটে নাজেহাল দক্ষিণ পশ্চিম ভারত। কেরালা থেকে কর্ণাটক পেরিয়ে মহারাষ্ট্র, গোয়া এবং দমন-দিউকে নিজের ভয়ংকর রূপের সাক্ষী করে রাখলো এই ঘূর্ণিঝড়।
পাঁচ রাজ্যকে ওলট পালট করে অবশেষে গতকাল রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তা আছড়ে পড়ে গুজরাটের ভাবনগরের কাছে। বিভিন্ন রাজ্যে লাল সংকেত জারি করা হয়েছিল এই অতি প্রবল ঝড় টাউটের কারণে। লাল সংকেতের নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গে বহু মানুষকে নিচু জায়গা থেকে উঁচু নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা সম্ভব হয় সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা জওয়ানদের সাহায্যে ও প্রশাসনের যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। ১৬৫ কিমি বেগে ঝড় ও বাঁধভাঙা বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই ঝড়ে প্রাণ হারান আঠারো জন। মূলত স্থলভাগে ঢোকার আগে বিচ্ছিন্নভাবে এই ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে মহারাষ্ট্রের, কর্ণাটকের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা, এবং দমনে প্রাণ হারান মানুষ। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যায় স্থলভাগে ঢোকার পর প্রায় তিন ঘণ্টার কাছাকাছি তান্ডব চালায় এই ঘূর্ণিঝড়। এখনও জলমগ্ন মহারাষ্ট্রের বহু এলাকা। এই ঝড়ের তান্ডবে ব্যাহত হয় উড়ান চলাচল। বন্ধ করতে হয় মুম্বাই এয়ারপোর্ট। তবে প্রশাসনিক তৎপরতায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ায় গুরুতর সমস্যা থেকে বাঁচানো গেছে বহু প্রাণ। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে সমস্ত রকম সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *