বিজেপি তার কথায় ও কাজে দুই মেরুর অবস্থান পশ্চিমবঙ্গেও বজায় রাখছে। মতুয়া ভোট নিজেদের দিকে টেনে আনতে সেই ঠাকুর পরিবারের একের পর এক ব্যক্তিকে দলে নিয়ে এসে সাংসদ বিধায়ক করার কাহিনী। একদিকে পরিবার তন্ত্রের বিরুদ্ধে ক্রমাগত তোপ দাগার সাথে একের পর এক রাজ্যে পরিবার তন্ত্রকেই সব থেকে গুরুত্ব দেওয়াতে বিজেপির কাজ তুলনাহীন। পরিবার তন্ত্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও মতুয়াদের ভোট টানার জন্য অন্য মতুয়া ব্যক্তির উপর ভরসা না করে ঠাকুর পরিবারের ব্যক্তিদেরই ভোটে দাঁড় করানো হচ্ছে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ একের পর এক রাজ্যে বাবার পর তার সন্তানদের হাতে ক্ষমতার ব্যাটন তুলে দিয়েছে। ভারতে ক্ষমতার মানদণ্ড শুধুই তো রাজ্যের রাজনৈতিক প্রধান নয়, একভাবে দেখতে গেলে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড ভারতের অন্যতম ক্ষমতার কেন্দ্র। সেই ক্ষমতার মাথায় অমিত শাহ তার ছেলে জয় শাহকে সচিন বা সৌরভের ব্যক্তিত্বকে টপকে বসিয়ে দিয়েছেন। পরিবার তন্ত্র কাজ করলে যেন এক্ষেত্রে যোগ্যতা দেখার দরকার নেই। তারও আগে যেমন হিমাচলের বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে অনুরাগ ঠাকুরের একটিমাত্র রঞ্জি ম্যাচে খেলা। রাজ্য ক্রিকেট বোর্ডের প্রধানের দায়িত্ব পালন করতে হলে অন্তত একটি প্রথম শ্রেনীর ম্যাচে খেলা বাধ্যতামূলক হওয়ায়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে নিজেই নিজেকে দলের নেতা হিসাবে ঘোষণা করে একটি রঞ্জি ম্যাচ খেলতে নামেন।
২০১২ সাল নাগাদ মঞ্জুল কৃষ্ণ ঠাকুর ঠিক বুঝে উঠতে পারতেন না হয়তো তিনি ঠিক কোন দলে থেকে কাজ করতে পারবেন। তাই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে আসা যাওয়া করতেন। ২০১৯-এর পর অবশ্য ভবিষ্যতে কার কাছে বেশি খমতা পাবেন সেই নিয়ে দ্বিধা মুক্ত হয়ে বিজেপিতে নিজের স্থান পাকাপাকি করে নিয়েছেন। ত্রাণ দপ্তরের মন্ত্রীত্ব সামলাচ্ছেন। বিজেপি তার ২৭ বছরের ছেলেকে সাংসদ করার পর এবার মঞ্জুলের আর এক সন্তান সুব্রত ঠাকুরকে বিধায়ক করার জন্য প্রার্থী করছে। রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রশ্নে পরিবার তন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা ও কাজের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।